Skip to main content

Posts

Showing posts from 2021

জীবনের নিরন্তর বিচরণের চালচিত্র বিতান চক্রবর্তীর ‘ল্যান্ডমার্ক

  জীবনের নিরন্তর বিচরণের চালচিত্র বিতান চক্রবর্তীর ‘ল্যান্ডমার্ক শাশ্বত কর     বি তানের গল্পের সাথে পরিচয় অনেকদিনের। ব্যক্তি বিতানের সাথে পরিচয় অবশ্য তারও আগের। সেই স্কুল থেকে। একই স্কুল। একই মাস্টারমশাই। একই নাটকের দল। অনেকটা একই ভাবে মনোভূমি তৈরি করে দিয়েছিলেন গহর স্যার, নির্মলস্যার। সেই সময়ের অসংখ্য স্মৃতিকে এক করে এই ব্যক্তিগত কথাটুকু বলার দরকার এই কারণে যে ব্যক্তি বিতান আর গল্প লিখি      য়ে বিতানের কোনো ফারাক আমি চোখে দেখি না। চারপাশ দেখে যেমন বোঝে, যেমনি অনুভব করে তেমনি বলে। চরিত্র ছাড়া আর কিছু বানানোর দিকে হাঁটে না। সহজ কথা স্পষ্ট করে বলার অদ্ভুত দক্ষতা আছে ওর। আগেও দেখেছি, ‘সাম্প্রতিকতম’ গল্পের বইটাতেও তার ব্যতিক্রম দেখলাম না। কেবল দেখলাম গল্প বলার মুন্সিয়ানা আরও বেড়ে গেছে। অদ্ভুত মোচড় দিচ্ছে গল্পের নানা জায়গায়। ছোটো ছোটো বাক্যে নির্মেদ স্মার্ট কথন। গল্প বলার সময় নিজের আবেগটাকে বেশ কষে বেঁধে রেখে গল্পটাকেই বলছে। ফলে গল্পই আবেগ উসকে দিচ্ছে পাঠকের। ব্র্যাভো! সব থেকে ভালো লাগার বিষয়, এ হলো একেবারে পরিচিত পরিবেশের গল্প। সিদ্ধার্থ, মলিদি, সমী...

এমনই বরষা ছিল সে দিন

  সময় রহস্যময় । তার রূপ দেখা যায় না, ফলে হাতে তার কোন অস্ত্র, সে জানাও দুঃসাধ্য। নিজের খেয়ালে চলে। অস্ত্র নয়, বোধহয় রং তুলি তার হাত জুড়ে । কী অদ্ভুত ভাবে পরিবর্তন আঁকা হয়ে যায় । মাঝে মাঝে যখন বাইরের ছবি দেখে ভিতরে তাকাই, মনে হয় এই বদল ভিতর ঘরেই বেশি। বাইরের যে বদল , সে পুরো দস্তুর নিয়মানুবর্তী । নিয়ম মেনে চাকায় চেপে ঘোরে। ঘুর্ণনের নিয়মে সে বদলের ছবি প্রায়শই এক। একমুখী বদলে যায় কেবল ভিতরের ঘর। বদলে যায় ভিতর ঘরের চার দেয়ালের রং। সে দিনের রং একরকম, তারুণ্যের ভোরে একরকম, আবার তারুণ্যের মাঝ আকাশে তার রং আর একরকম। এই যে রাত ভর বৃষ্টি- ছেলেবেলায় বৃষ্টি আগেও হতো, এখনও হয়। জল এখন যেমন জমে, আগেও জমতো। বাড়ির পাশের ফাঁকা জমির মোথা মোথা শন, ঘাস, কচুবন, মোল্টা, কালকাসুন্দি, বনতুলসি জলে ডুবে ডুবে মাথা নাড়তে নাড়তে একদিন হলদে হয়ে যেত। মরা নারকেলের গুঁড়ি চেপে ছিপছিপে সোনাব্যাঙ । আধডোবা স্থলপদ্মের গাছে গোলাপি ফুলের পাশে দুধশাদা বক। সন্ধ্যে হলেই ঝিঁ ঝিঁ আর ব্যাঙের কাওয়ালি। জমে থাকা জল তখন খেলার মাঠ । হাওয়া কমে যাওয়া সাদা বল ভাসছে জলে, কয়েক জোড়া ছোট ছোট পা ঝুপুস ঝুপুস করছে জল ঘিরে। ভিজে চুপ্পুস! পু...

ছাতা, আষাঢ় আর হরিপদ

    ছাতা , আষাঢ় আর হরিপদ শাশ্বত কর       মনে পড়ছে । বেশ কিছু দিন আগে একটা ছবি , বলা যায় , ভাইরালই হয়েছিল । ‘ হার্বাল ছাতা ’ । প্রযত্নে স্বনামধন্য বাবা । বিষয়টা এমন কিছু নয় । একটা বড় কচু পাতা । তা , গ্রামে গঞ্জে অমন হার্বাল ছাতা বর্ষাদিনে সকলেই দেখেছে ! আমিও দেখেছি । আমাদের হরিপদই তো কত সময় মাথায় দিয়ে প্রাইমারি ইস্কুলে যেত । এই রে ! হরিপদর কথা সেই এসেই গেল ! এ এক অদ্ভুত জ্বালা ! আশ্চর্য সমাপতন ! ছাতা টানলেই হরিপদ যেন কোত্থেকে পাকা পোনার মত ঘপল ঘপল ঘাই মেরে ওঠে ! এই যে হরিপদ , এ কিন্তু সত্যিই ‘ সাদামাটা ছোট খাটো লোক ’ । এখনও , আড়াই যুগ আগেও । যে সময়টার কথা এখন মনে আসছে , হরি তখন ক্লাস সেভেন । বলা বাহুল্য , আমিও তাই । মফস্বলের ইস্কুলে পড়ি । হরিপদর মজ্জায় মজ্জায় তখন ‘ আষাঢ় ’ । ‘ নীল নব ঘনে আষাঢ় গগনে তিল ঠাঁই আর নাহি রে / ওগো , আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে ’- হরিপদ তাই যায়ও না ! গেলেও ছাতা মাথায় যায় । আর আমাদের ওখানে তখন আকাশে মে...