Skip to main content

Posts

Showing posts from 2022

রসেবশে রসগোল্লা, জালে বসা সমাজ

হুঁ হুঁ বাবা অ্যায়সা ব্যায়সা যুগ নেহি, যাকে বলে আদ্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ! খাওয়া থেকে পেট খোলসা, অজীর্ণ থেকে কোষ্ঠকাঠিন্য সব কিছুই উৎসবের অনুসারী শিল্প। সিনেমা থেটার থেকে আদুরে ছানার দুধের দাঁত পড়া সব ফোটোগ্রাফির সাবজেক্ট! খিচিক খিচিক মোবাইল চমকাও, ঢিচিকসে ওয়ালে পোস্টাও- ব্যস! লাইকস! লাইকস! লাইকস! ঘেঁচু বা কাঁচকলা অথবা ঠেঙ্গা নামক যে নঞর্থক এক্সপ্রেশনটি ছিল, সেই বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দর্শনের আশ ইদানীং ভগবান দর্শনের ব্যাকুলতার মত! রামকৃষ্ণ পরমহংস বলেন, যত মত তত পথ। অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেন হাইটেক মনুষ্যকুল! নিত্য নতুন পথের সন্ধানে তারা নিরন্তর ব্যস্ত। যত পথ ততই কিচাং। যত কিচাং ততই তো সুখ। ভুরি ভুরি পোস্ট ঢেউয়ের মত আছাড়ি বিছারি। তক্ক, বিতক্ক, ঠোনা পালটি ঠোনায় পক্ষে বিপক্ষে সমাজ একেবারে উত্তাল! তা বলে যেন তেঁতুল পাতা ন’জন সমাজ ভেবে বসবেন না! ও সব বেশ পুরনো দিনের কথাবাত্তা! এখন ভার্চুয়াল সমাজের দিন! কাজেই ভার্চুয়ালি সামাজিক সবাই। ভার্চুয়াল বিপ্লব, ভার্চুয়াল নৈবেদ্য, ভার্চুয়াল পরকীয়া, ভার্চুয়াল বিল্বপত্রপুষ্পাঞ্জলি। নিত্যি দিন আপডেটেড থাকতে চান তো বস ভার্চুয়াল বিশ্বে আসুন। লোকাল টু গ্লোবাল যে কোন

বল্লভপুরের রূপকথা- সিনেমায় নাটক, না কি নাটকের সিনেমা?

শাশ্বত কর  প রিচালক অনির্বাণ ভট্টাচার্য মনে হয় এই প্রশ্নের মুখোমুখি  বারবার হয়েছেন এই ছবি বানানোর সময় অথবা বাদল সরকারের এই মঞ্চ সফল জনপ্রিয় নাটকের ছবি বানাবেন এমনটা স্থির করার সময়। কী নতুন তিনি দেবেন যাতে সিনেমার ক্যানভাসে নাটকের ছবি অক্ষুণ্ণ থাকে! অবশ্যই ভেবেছেন, অনেক ভেবেছেন। আর আমাদের মতো সাধারণ দর্শকরা সেই ছবি দেখার শুরু থেকে শেষ সেই পরিণত ভাবনা চিন্তার প্রতিফলন দেখেছেন। অনবদ্য মুন্সিয়ানায় নাটকের সিনেমায়ন করেছেন অনির্বাণ। মূল নাটক খুব বেশি বদলাননি অনির্বাণ। তবে শুরুটা বদলেছেন, সিনেমা দেখাতে বদলাতে হতোও। মূল নাটক শুরু হয় মূল চরিত্র রাজাবাহাদুর ভূপতি রায় এর বন্ধু সঞ্জীবের সরস সংলাপে , তিনিই যেন সূত্রধার,  তাঁর কথায় দর্শক নাটকের সিংহদুয়ার পাড় হয়ে ঢুকে পড়ে বল্লভপুর রাজবাড়িতে। আর এই সিনেমার শুরু করেছেন অনির্বাণ মোটামুটি নাটকের মধ্যেই এক ঘটনা থেকে। রাজাবাহাদুর ভূপতি রায় মনোহরকে লুকিয়ে ডিসট্যান্ট সিগন্যালে ট্রেন থেকে নেমে পালিয়ে এসেছেন বলেছিলেন । এই ছোট্ট সংলাপের বড় একটা ছবি এঁকে তা দিয়ে দর্শককে প্রথমেই বেঁধে ফেলেছেন পরিচালক। অন্ধকারে মাঝির সাথে রাজাবাহাদুরের কথোপকথনে

মেসকুটুম্ব

  মে স বাড়ি ভারি মজা, কিল চড় নাই- আম জনতার কিন্তু এটাই ধারণা। মেসবাসীরা কেউ কেউ হয় তো হাঁউমাউ করে উঠবেন; হয় তো বলবেন, ‘ বাইরে থেকে ওরম বলাই যায় দাদা, থেকে দেখুন কত ঝক্কি!’ তা সে তো বটেই। ‘সমুদ্র যাত্রায় যে কত যন্ত্রণা, সে কেবল ভুক্তভোগীরাই জানেন’। এ তো ক্লাস ফাইভ থেকে ধ্রুব সত্য। কিন্তু এটাও তো ঠিক, অন্য লোকের সমুদ্রযাত্রার ছবি- দিগন্তের নীলে ডুব দেব দেব নিটোল গোল কমলা লেবু…মেঘ আর জলে তার ছোঁয়া মিশে একাকার…নাম না জানা পাখির পালকে তার রঙ- বলুন, মন টানে না? তবে? আসলে, মেস হল এমন এক মামাবাড়ি যেখানে ঘাড় ধরে নামিয়ে দেওয়ার কেউ নেই, কানটি ধরে মুলে দেওয়ার কেউ নেই, রাত দুটোয় যেখানে কাপড় কাচতে গেলে কেউ ঝামটা দেয় না, দেরি করে উঠলে মহাভারত থমকে যায় না। পেপার পেতে হাতের মুঠোয় মুড়ি চানাচুর আর কাঁচা লঙ্কার ঝাল যেখানে বিরিয়ানির সোয়াদ দিতে পারে। প্র্যাক্টিকাল ক্লাসের ঘাম, তিরিক্ষি বসের ঝাল, প্রেমিকার সেন্টু- সব কিছু জাস্ট গপ করে গিলে নিতে পারে- কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আগুন জ্বেলে ধোঁয়ায় ধোঁয়ায় ফুঁকে দিতে পারে। মেস মানে হল আড্ডা। নির্ভেজাল, নিঃস্বার্থ আড্ডা। পড়তে পড়তে আড্ডা, হিসেব মেলাতে মেলাতে আড্ডা, বাজার

নারায়ণ দেবনাথ

  হঠাৎ বন্ধ আঁকার খাতা, ঝাপসা দৃশ্য যতদূর- রং শুকোলো, জাল গুটালো রঙিন বেড়াল বাহাদুর! বাচ্চু বিচ্ছু সুবোধ হলো, ছুটি নিলেন বাঁটুল! হাঁদাভোদার গাছ মুড়োলো, কাঁদছে শামলা শাটুল! কেল্টুদা কেন বড্ড শান্ত? নন্টে ফন্টে কান্না? হাতিরাম পাতি খুলে দিলেন আজ বোর্ডিং এর যত জানলা! কৌশিক রায় অবসর নিল, অভিযান হলো স্তব্ধ! শুঁটকি মুটকি বটুকলালেরা রংহীন, নিঃশব্দ! ডানপিটে খাঁদু বড় হয়ে গেলে কেমিক্যাল দাদু কাজহীন, ব্ল্যাক ডায়মন্ড ইন্দ্রজিতের পাঁচঅঙ্কে আজ ড্রপসিন! বই জুড়ে সব ভিড় করে আছে নেই শুধু আজ সারথী, মুখভার আজ শুকতারাদের কাঁদছে কিশোরভারতী! মনে জমে আছে দুষ্টুমি আর চোখ ভরে আসে কষ্ট শৈশব থেকে শিশুদিনমণি আজ কি গেলেন অস্ত? অস্ত যায় কি এমন জ্যোতিরা, ফুরোয় কি কিছু আসলে? মনের ভিতরে যে বীজ পুঁতেছো, গাছ হবেই ঠিক চাষ হলে। ছেলেবেলাগুলো সোনা করে দিত রংতুলি আর তাঁর মন ছোটদের মনে আকাশটা ভরে লিখবেন ছবি নারায়ণ। -শাশ্বত কর, 18-ই জানুয়ারি, 2022