Skip to main content

বল্লভপুরের রূপকথা- সিনেমায় নাটক, না কি নাটকের সিনেমা?

শাশ্বত কর 






রিচালক অনির্বাণ ভট্টাচার্য মনে হয় এই প্রশ্নের মুখোমুখি  বারবার হয়েছেন এই ছবি বানানোর সময় অথবা বাদল সরকারের এই মঞ্চ সফল জনপ্রিয় নাটকের ছবি বানাবেন এমনটা স্থির করার সময়। কী নতুন তিনি দেবেন যাতে সিনেমার ক্যানভাসে নাটকের ছবি অক্ষুণ্ণ থাকে! অবশ্যই ভেবেছেন, অনেক ভেবেছেন। আর আমাদের মতো সাধারণ দর্শকরা সেই ছবি দেখার শুরু থেকে শেষ সেই পরিণত ভাবনা চিন্তার প্রতিফলন দেখেছেন। অনবদ্য মুন্সিয়ানায় নাটকের সিনেমায়ন করেছেন অনির্বাণ।

মূল নাটক খুব বেশি বদলাননি অনির্বাণ। তবে শুরুটা বদলেছেন, সিনেমা দেখাতে বদলাতে হতোও। মূল নাটক শুরু হয় মূল চরিত্র রাজাবাহাদুর ভূপতি রায় এর বন্ধু সঞ্জীবের সরস সংলাপে , তিনিই যেন সূত্রধার,  তাঁর কথায় দর্শক নাটকের সিংহদুয়ার পাড় হয়ে ঢুকে পড়ে বল্লভপুর রাজবাড়িতে। আর এই সিনেমার শুরু করেছেন অনির্বাণ মোটামুটি নাটকের মধ্যেই এক ঘটনা থেকে। রাজাবাহাদুর ভূপতি রায় মনোহরকে লুকিয়ে ডিসট্যান্ট সিগন্যালে ট্রেন থেকে নেমে পালিয়ে এসেছেন বলেছিলেন । এই ছোট্ট সংলাপের বড় একটা ছবি এঁকে তা দিয়ে দর্শককে প্রথমেই বেঁধে ফেলেছেন পরিচালক। অন্ধকারে মাঝির সাথে রাজাবাহাদুরের কথোপকথনের এই দৃশ্য তার দৃশ্যগুণে কত যে ডাইমেনশন তৈরি করে! নাটকীয় ধাক্কা দেওয়ার ক্ষমতা আছে অনির্বাণের। নৌকোর সংলাপ থেকে ধপাস করে ফেলে দেন যখন রাজাবাহাদুর বলেন, 'টাকাটা হপ্তা দুয়েক বাদে এসে মনোহরের থেকে নিয়ে যাস। আজ ......খুচরো নেই!'- রাজাবাহাদুরের এটুকু বলেই সামনে হাঁটা আর মাঝির সেই দৃষ্টি- এই থেকেই রাজাবাহাদুর সম্পর্কৃ একটা ধারণা তৈরি হয়ে যায়। অন্ধকারে রাজার পিছু নেয় তিনটে লোক! তুমুল সাসপেন্স! এই রাজাবাহাদুর আসলে কে? রাজবাড়ির বঞ্চিত কুমার কি? নিশুত রাতে কি লুকিয়ে রাজবাড়ির গুপ্তধন লুঠ করতে এসেছেন? লোক তিন জন কারা? কী চায়? এর পরেই নাটকীয় ধাক্কা! সাসপেন্স ঘন করা লোক তিনটের একজনের কুমড়োগড়াগড়ি! আর তাদের কথা থেকে তাদের সরল সাদা চরিত্রের আবছা প্রকাশ। ওদিকে রাজাবাহাদুর ততক্ষণে আঁধারছাওয়া প্রেতপুরির মতো অট্টালিকায় দড়িদড়া বেয়ে চোরের মতো ঢুকছেন! আশ্চর্য সেই দৃশ্য! এই শান্ত, এই ভয় রসের ঢেউ! রাজঘড়িতে টিক টিক। কাঁটা ছুলো এগারোটা। রাজাবাহাদুর ঘুমের ভানে চোখ বুজলেন।  তারপর শুরু হলো ভৌতিক কারবার! টানটান দর্শক। আবার নাটকীয় ধাক্কা! ভেসে উঠল সুর। গানের আবহ এরপর বাদল সরকারের সাথে এই প্রজন্মের দর্শকের পরিচয় করিয়ে প্রায় তাঁর হাত ধরেই নিয়ে গেল বল্লভপুরের রপকথায়।




আর গপ্প বলব না। আমি তো আর স্পয়লার দিতে বসিনি রে বাবা! ছবিটা দেখে খুবই ভালো লেগেছে বলে নিজের খাতায় লিখে রাখছি কেবল। তবে একটা কথা বলব। এরপর সিনেমা হাঁটবে নাটকের পথে।  প্রবেশ, প্রস্থান, মঞ্চসজ্জা, পোশাক, আবহ, আলো, সংলাপ- সর্বোপরি অভিনয় - সবটাই নাটকের স্বাদ দেবেই। ভালো লাগাবেই। মূল নাটকে সব মিলিয়ে চরিত্র দশ, না কি ভুল হলো! রঘুদাকে ধরে বোধহয় এগারোই হবে! কিন্ত রঘুদাকে ধরব কি? নাট্যকার তো নিজেই বলেছেন, "রায়রায়ান রঘুপতি ভুঁইঞা'কে 'নিয়ে এখনই মাথা ঘামানোর কিছু নেই'! সিনেমায় দু একটা বেশি চরিত্র।  থাকবেই। সংলাপের কথায় মনে এলো, মূল নাটকের সংলাপ কিন্ত খুব বেশি বদলাননি পরিচালক, বলা চলে অক্ষুণ্ণই রেখেছেন। নাটকের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা না থাকলে এ কাজ সম্ভব না। কারণ যতই যা হোক, পরিচালক গড়ছেন তো সিনেমা। সিনেমার তো নিজস্ব কথা আছে। নাটকের থেকে তা তো আলাদা। এদিক ওদিক হলে তো আর দর্শকের ভালো লাগবে না! কাজেই সিনেমাই বানিয়েছেন অনির্বাণ।  তবে মোদ্দা কথা হলো সিনেমা এখানে নাটককে খেয়ে ফেলেনি।  পরিচালক সচেতন ভাবে তা আটকেছেন। একই ভাবে নাটকও এখানে সিনেমাকে গ্রাস করেনি। পরিচালক সচেতন ভাবে সেটিকেও সামলেছেন। এমন মুন্সিয়ানা যাঁর, তিনি তো না থেকেও গোটা ছবি জুড়ে থাকবেনই। অবশ্য অভিনয়ে ছিলেন না বললে বোধ হয় ভুল হবে। রাজাবাহাদুরের ভয়েস বোধ হয় অনির্বাণের। অন্তত ধরণে তেমনই তো লাগছিল।

এই ছবির চরিত্র যারা করেছেন,  প্রত্যেকেই সুবিচার করেছেন চরিত্রের প্রতি। মনোহরের "হেই হপ" অথবা যাকে বলে একেবারে আগমার্কা মোঘলিয়ানা- "বন্দেগী আমীর মেহেমান! গরীবখানায় তসরিফ রাখতে হুকুম হোক! আমি রাজাবাহাদুরকে এত্তেলা দিই!' " রায় রায়ান রাজচক্রবর্তী শ্রীল শ্রীমান রাজা ভূপতি রায় ভুঁইঞা বাহাদু-র!" -জীর্ণ রাজবাড়িতে সত্যিই আভিজাত্যের রোয়াব! সব গিয়েও আভিজাত্যের প্রতি আনুগত্য- পাওনাদার টু সাজনদার কনভার্সন- সব একেবারে প্রাণবন্ত কুশিলবদের অভিনয়ে। এই যে থেকেও নেই রঘুদা- তাঁর কন্ঠে কালীদাস শুনলে যে কেউ প্রেমে পড়ে যাবেন এখনও। রাজাবাহাদুরের চরিত্রটি যিনি করলেন, সেই সত্যম ভট্টাচার্যও খুব সপ্রতিভ। মন কেড়েছেন। খুব পরিচিত মুখ বলতে আমার কাছে ছন্দার চরিত্রের সুরঙ্গনা। কিন্ত প্রত্যেকেই তাঁদের দক্ষতা দেখিয়েছেন। অভিনয় দেখে মনে হয়েছে তাঁরা সবাই সম্ভবত নাটকের মানুষ। বাদল সরকারের নাটক তো! হাজার মাত্রা! হাজার দিকে গতি অথচ সুস্পষ্ট অভিমুখ। আর হাস্যরস।  ভয় রসের সাথে হাস্যরস, প্রেমরস, বাৎসল্য, সখ্যতা- সবকিছুর অনবদ্য মিশেল। অনেকদিন বাদে বাংলা পর্দায় এমন নাটক আঁকার বলিষ্ঠ সৃজনশীলতা দেখলাম। মনে থেকে যাবে বহুদিন।

এই নাটক বহু প্রযোজিত,  বহু চর্চিত, বহু অভিনীত,  পরিচালিত। 1963-64 তে লিখেছিলেন বাদল সরকার। গল্পের মূল রসিকতাটুকুতে  পুরোনো এক বিদেশী ছবির ছায়া থাকলেও চরিত্র চিত্রণ, নাট্যশৈলী,  সংলাপ- সবই বাদল সরকারের।  প্রথম অভিনয় হিন্দীতে। তারপর মারাঠীতে। তারপর বাংলায়। নাট্যকারের পরিচালনায় 1970 থেকে। তার মানে সেই অর্থে নাটকটাই প্রায় ষাট বছরের। তারপর বহু গোষ্ঠী এই নাটকের মঞ্চায়ন করেছেন। বছর পাঁচেক আগে সম্ভবত অখিলেশ জয়সওয়ালের পরিচালনায় "বল্লভপুর কী রূপকথা' নামে একটা সিনেমাও হয়েছে। তা হলে অনির্বাণের এই নতুন সিনেমা কী আর এমন নতুন?

উত্তর দিয়েছেন পরিচালক নিজেই। সিনেমার শুরুতে একবার,  শেষে একবার। একটা লুপ এঁকেছেন। একটা বৃত্ত। একই সংলাপ,  দু'জনের মুখে। একবার শুরুতে মাঝিকে দিয়ে বলিয়েছেন,  আর একবার শেষে সাহা বলেছেন। " আমার বাবা বলতেন, একই গল্প বারবার বললেও একই থাকে না, বদলে বদলে যায়!"  বদলেছেও। অভিনয়ে না থেকেও গোটা ছবি জুড়ে অনির্বাণ আর তাঁর বাদল সরকার। ছবির শেষে কার্টেন কলের রীতি মেনে একটু খানি যেই না পর্দায় অনির্বাণ এলেন, দর্শকদের হাততালি বুঝিয়ে দিল তাঁর উপস্থিতি!

নাটক আর সিনেমার এই অপূর্ব সহাবস্থান যদি আরও পরিচালকদের উৎসাহিত করেন, তা হলে আরও কত যে ভালো ছবি আমরা পাব! এ পোড়া দেশে নাট্যকার, অভিনেতার যোগ্য সম্মান, সাম্মানিক না থাকলেও ভালো নাটকের তো অভাব নেই।

যা হোক অনেক কথা লিখলাম। কালীপুজোয় শ্বশুরবাড়ি এসে সবাইকে নিয়ে মনের মতো ছবি দেখতে পেলাম। বাড়তি পাওনা, ভায়রাভাই মানসের কল্যাণে শেষে ছবির হালদারমশাই- সন্দীপ ভট্টাচার্যকে বাস্তবে পেয়ে যাওয়া। পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনার বাকি দু আনাই বটে। অনেকদিন বাদে বাংলা পর্দায় এমন নাটক আঁকার বলিষ্ঠ সৃজনশীলতা দেখলাম। মনে থেকে যাবে বহুদিন।

দেরি করবেন না, রাজবাড়ির দরজা বন্ধ হওয়ার আগে দেখে আসুন। সপরিবারে।


হালদারমশাই এর সাথে মানস আর আমি। মোহন টকিজ,  বহরমপুর।  26.10.2022 ।


পর্দার হালদারমশাই এর সাথে তাতাই, মন, আমার পুত্ররত্ন বেলো আর মিঠি। মোহন টকিজ, বহরমপুর,  26.10.2022


কার্টেন কল। পরিচালক অনির্বাণ ভট্টাচার্য,  সাথে সত্যম ভট্টাচার্য এবং সুরঙ্গনা। সুরঙ্গনার গান সত্যিই অনবদ্য। নন্দন-1, 28.10.2022. ভিডিও সৌজন্য- শ্রীমতী রুবি সরকার। 



দর্শক আবৃত পরিচালক।  নন্দন, 28.10.2022, ছবি সৌজন্য- রুবি সরকার 

Comments

Popular posts from this blog

বর্ষ শেষ, থার্মোডিনামিক্সের প্রথম সূত্র আর সাধারণ জীবন

  শাশ্বত কর       বর্ষশেষের সূর্য অস্ত যাচ্ছে। শীত তো পড়েছে। লাল সোয়েটার, মোজা, মাঙ্কিক্যাপে জুবুথুবু বৃদ্ধ সূর্য অস্ত যাচ্ছেন। যাচ্ছেন কি? যাচ্ছেন কোথায়? লাখ টাকার প্রশ্ন! বিজ্ঞানের এক উত্তর, শিশু ভোলানাথের এক উত্তর, গোঁয়ার গোবিন্দর এক উত্তর, বোদ্ধার এক উত্তর! ঘন রহস্য! অথবা কোনোই রহস্য নেই। কৃষ্ণ কেমন, না যার মন যেমন। জলে হাওয়ায় গেলাস ভরা ভাবলে ভরা, আধখানা খালি ভাবলে খালি। আসল কথাটা হলো আজ বছরের শেষ সন্ধ্যে। আজ হেব্বি সেলিব্রেশন! কোথাও জামাল কুদু, কোথাও লুটপুট গয়া তো   কোথাও দিন হ্যায় সানি সানি সানি-   চারপাশ থেকে নানা রকমের গান ভেসে আসছে। একের সুরে আরেক চেপে বসায় কোনোটাই দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না মনে। এমনটাও ভালো। এতেও এক ধরণের নির্লিপ্তি আসে। নির্লিপ্তিই তো মুখ্য, নির্লিপ্তিই মোক্ষ। আজ ভর দুপুরে ছাদে গিয়ে অবহেলায় বেড়ে ওঠা গাছপালাগুলোর একটু পরিচর্যা করলাম। খালি দুটো টবে দুটো বীজ পুঁতলাম। একটা উচ্ছের  আর একটা ঢেঁড়সের । এই দুটোই আসলে আজকের বর্ষ শেষের আমি। কাজের দুনিয়ায় যেমন তেঁতো, ঘরের দুনিয়ায় তেমনি ঢেঁড়স। তো দুই আমিকে বছর শেষে দিলাম পুঁতে। নতুন ভোরে খোলস ছেড়ে বেরি

অসুস্থ সমাজ, অরাজনৈতিক আন্দোলন এবং নিছক সাধারণী আবেদন

  ডাক্তারদের অনশন আজ ১০ দিনে পড়ল । পাঁচই অক্টোবর থেকে আমরণ অনশনে বসেছেন। প্রথমে ছ'জন পরে আরো একজন , উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে আরও দু'জন জুনিয়র ডাক্তার আমরণ অনশনে বসেছেন। বলছি বটে জুনিয়র, কিন্তু যে পর্যায়ের পরিণত মনোভাব এঁরা দেখিয়েছেন এবং দেখাচ্ছেন চিকিৎসা পরিভাষায় যাই হোক, মানবতার পরিভাষায় এরা সিনিয়রস্য সিনিয়র।  অনশন। কেবল জল। আর কিছু নয় । বলাই সহজ, কাজে মোটেই সহজ নয়। একবার রাগ করে না খেয়ে একবেলা ছিলাম। আর মনে পড়ে আর একবার মায়ের সাথে উপোস করেছিলাম কোজাগরি পূর্ণিমায়। দুবারই সন্ধ্যে হতে না হতেই হাটুতে হাঁটুতে ঠোকাঠুকি লেগেছিল। আর টানা 10 দিন অভুক্ত ঘরের ছেলেমেয়েরা! এখনো চলছে তাঁদের অনশন ব্রত।  শারীরিক সমস্যা জয় করতে হচ্ছে। জনমানসের আশা প্রত্যাশার পাহাড় জয় করতে হচ্ছে। মানসিক চাপ জয় করতে হচ্ছে। রাষ্ট্রের চাপ। সহজ কথা তো নয়। তাও জয় করতে হচ্ছে। অকথা কুকথাকে খড়কুটোর মত ছুঁড়ে ফেলে পাখির চোখে চোখ রাখতে হচ্ছে। কেন করছেন তারা অনশন? রাজ্যে গত নয়-ই অগস্ট নারকীয় ঘটনা ঘটে গেছে আর জি কর মেডিকেল কলেজে। তাদেরই সহকর্মী দিদি অথবা বোনের নৃশংস পরিণতি তাঁদের মুঠো শক্ত করেছে। চ

এসো মা, এসো মা উমা

 শাশ্বত কর সুপ্তপর্ব “যেয়ো না, রজনি, আজি লয়ে তারাদলে! গেলে তুমি, দয়াময়ি, এ পরাণ যাবে!” ঠাকুর দালানে ধুনুচি সাজানো হচ্ছে। এও এক শিল্প! নারকেলের ছোবড়া উল্টো করে এমন করে সাজা হবে যে ধুনুচি নিম্নমুখী হলেও সহজে পড়বে না! নইলে আরতি জমবে কেমন করে!  ছোবড়া চুঁইয়ে ধোঁয়া মিশছে বাতাসে। বাতাসে ধুনোর গন্ধ! বাতাসে কর্পুরের গন্ধ! বাতাসে শিউলি, ছাতিম, বাতাবি ফুলের গন্ধ! বাতাসে ঠান্ডা আদর! আদর আমার গালে। মায়া আদর, আচ্ছন্ন আদর। যে সুগন্ধী বাতাস নাকি গোলাপের মৃদু পাঁপড়ি এই আদর এঁকে গেল, এই তো খানিক আগে যখন তেতলার চক বারান্দা থেকে ঝুঁকে নিচে ঠাকুরদালানের পাশে রাঙাপিসিমাদের আড্ডা দেখছিলাম, তার নাম এখানে লেখার কীই বা দরকার? গতকাল সকালে পুষ্পাঞ্জলির ফুল বেলপাতা সেই আমায় দিয়েছে, ভিড়ের অছিলায় আঙুল ছুঁয়ে গেছে। কাছে আসলেই মায়ের পুজোর গন্ধ ছাপিয়ে যে গন্ধটা আমায় কাঁপিয়ে দিয়ে যাচ্ছে, সেটা ঠিক পুব বাগানের বাঁধানো বেদির পাশে রাত আলো করে থাকা নিশিপদ্মের মতো! এ গন্ধের কাছে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকা যায় ঘন্টার পর ঘন্টা! এখন যেমন হাবার মতো দাঁড়িয়ে আছি চক বারান্দায়। হাতে শ্রীশঙ্খ! ঠাকুর তোরঙ্গ থেকে বড় শাঁখখানা আনতে পাঠিয়েছিলেন র