হুঁ হুঁ বাবা অ্যায়সা ব্যায়সা যুগ নেহি, যাকে বলে আদ্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ! খাওয়া থেকে পেট খোলসা, অজীর্ণ থেকে কোষ্ঠকাঠিন্য সব কিছুই উৎসবের অনুসারী শিল্প। সিনেমা থেটার থেকে আদুরে ছানার দুধের দাঁত পড়া সব ফোটোগ্রাফির সাবজেক্ট! খিচিক খিচিক মোবাইল চমকাও, ঢিচিকসে ওয়ালে পোস্টাও- ব্যস! লাইকস! লাইকস! লাইকস! ঘেঁচু বা কাঁচকলা অথবা ঠেঙ্গা নামক যে নঞর্থক এক্সপ্রেশনটি ছিল, সেই বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দর্শনের আশ ইদানীং ভগবান দর্শনের ব্যাকুলতার মত! রামকৃষ্ণ পরমহংস বলেন, যত মত তত পথ। অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেন হাইটেক মনুষ্যকুল! নিত্য নতুন পথের সন্ধানে তারা নিরন্তর ব্যস্ত। যত পথ ততই কিচাং। যত কিচাং ততই তো সুখ। ভুরি ভুরি পোস্ট ঢেউয়ের মত আছাড়ি বিছারি। তক্ক, বিতক্ক, ঠোনা পালটি ঠোনায় পক্ষে বিপক্ষে সমাজ একেবারে উত্তাল!
তা বলে যেন তেঁতুল পাতা ন’জন সমাজ ভেবে বসবেন না! ও সব বেশ পুরনো দিনের কথাবাত্তা! এখন ভার্চুয়াল সমাজের দিন! কাজেই ভার্চুয়ালি সামাজিক সবাই। ভার্চুয়াল বিপ্লব, ভার্চুয়াল নৈবেদ্য, ভার্চুয়াল পরকীয়া, ভার্চুয়াল বিল্বপত্রপুষ্পাঞ্জলি। নিত্যি দিন আপডেটেড থাকতে চান তো বস ভার্চুয়াল বিশ্বে আসুন। লোকাল টু গ্লোবাল যে কোনও বিষয় নিয়ে পোস্টাপুস্টি করুন। পাড়ায় ছেনোদার বাওয়াল থেকে সেলিব্রিটির লুকোনো ছাওয়াল, মাওয়ালি থেকে কাওয়ালি, পোস্ট মডার্ন আর্ট টু নেপোলিয়ন বোনাপার্ট- মতামত দিন, আলোচনার খই ফোটান। অন্যের উন্নতির ফোটোয় ‘শুভেচ্ছা’ লিখে মনের সুখে ‘শ’ কারান্ত অবতারের শাবক বলে গাল পাড়ুন! সুখই সুখ!
মোবাইলে সশব্দ ঢ্যারা দিয়ে রাখুন বিশেষ দিনগুলোয়। ঠিক ঠাক পোস্ট দিলে যেকোনো দিবসের আপনিই ‘দি বস’! দৈনন্দিন খবর টবর রাখুন। কোনও বল মাটিতে পড়তে দেওয়া যাবে না! এভারেস্টে চড়তে গিয়ে কে নিখোঁজ হল, সবার আগে পোস্টান। পারলে পদ্য লিখুন। যে কোনও রিসেন্ট জিনিস পাবলিক ফাটাফাটি খায়। এই দেখুন না এখন কেমন রসগোল্লা খাচ্ছে পাবলিক! যে কোনও মিডিয়ায় যান, রসগোল্লার রসে রসে একেবারে রসাকার! বছর দুয়েক আগেও একবার এমনি হয়েছিল, তখনও পাবলিক মেতেছিল, তবে এখনকার মাতন অবশ্য আরও গাঢ়! হবে না বলুন, একটা আভিজাত্যের লড়াইয়ে এত বড় জিত বলে কথা!
এই ‘টোটাল’ বিশ্বে সংস্কৃতি নামক আভিজাত্যের পেটেন্ট তো আমাদেরই। এ ব্যাপারে গুরু ‘মন মে হ্যায় বিশোয়াস/ পুরা হ্যায় বিশোয়াস! আমরা সর্বদা উত্তম পুরুষ। আমরা আর্টিস্টিক ঘরানার মানুষ। যৌবনে সবাই পদ্য লিখি। টিকিতে গাঁদা ফুল বেঁধে নাস্তিক্যের ভাষণ ঝাড়ি। এক কথায় কায়িক নয়, ‘লাইক’ মেলার শ্রমে আমাদের বড়ই টান; আর যদি মাইক জুটে যায় তাইলে তো ধরে রাখাই দায়! গুপ্ত চুলকুনির মত সুপ্ত প্রতিভা ভসভসিয়ে উথলে ওঠে। তবে আর একটা কথা না বললেই নয়, আমরা ভোজন রসিক। লাইফের ‘টোটাল’ বাসনার ফিফটি ফাইভ পয়েন্ট ফাইভ সেভেন পার্সেন্ট রসনায় কেন্দ্রীভূত।
এ হেন রসনামোদী আমাদের রসালো ঐতিহ্যের বিশ্ব জয়! কম কথা! বাংলায় ‘টক’ করতে ‘টাং’ হয়তো ‘লক’ হয়, তা বলে কি প্রেম দেবে না! ছানা পোনা কেউ বাংলায় কথা বললে স্ট্যাটাসে ঘ্যাটাস লাগে বটে, তা বলে কি পোস্ট দেব না! ছাওয়াল বাংলা মাধ্যমে পড়লে হয়তো মনে ‘নিম্নচাপে’র বেহুলো বাজে, তা বলে কি ‘হুক্কা’ ডাকলে ‘হুয়া’ দেব না! লড়াই আমাদের জন্মগত অধিকার, বাংলা মায়ের জন্যে আমরা সারাদিন অনলাইন থাকতে পারি। আমাদের টপকে অধিকার নিয়ে যাবে, আর আমরা বসে বসে দেখব ‘আমরা কি মার সেই ছেলে?’
আমাদের সার্চ আছে, রিসার্চ আছে, বুদ্ধি আছে, বাঁশ আছে- আমরা খুঁজে পেতে ঠিক তথ্য জোগাড় করে নেব। নেব কী, নিয়েইছি তো! জি.আই. ট্যাগখানা তো এখন আমাদের! জি.আই. ট্যাগটি খাদ্য না চুল গজানোর কটুগন্ধী তেল- ও সব ভাবার দরকার নেই, ও বস্তুটি পেয়ে রসগোল্লার ন্যাজ কতটা ওঁচালো সে ভাবারও দরকার নেই- দরকার কেবল মাতন। দুগ্গাপুজো চলে গেছে, এমন কী রাশ মেলাও গত- এমন খটখটে খরার সময় এমন হাতে গরম রস উৎসবের হুজুগ পেলেও মাতবো না!
আর তাছাড়া রসগোল্লার সাথে কি আমাদের এক দিনের সম্পক্ক! একই বস্তু, তার কত রস! কত মাত্রা! পরীক্ষার আগে তার নামে অযাত্রা, পরীক্ষায় তাকে পেলে বাড়িতে কু সন্তান, আবার যেই না বাড়ির গুচ্চুমনা ফাস্টোকেলাস পেলে, অমনি নচোগোল্লার হাঁড়ি নিয়ে নছো বিতরণ! একই অঙ্গে কত রূপ! বঙ্গ জীবনের অঙ্গ। সে জন্যেই না নাদুস নুদুস গোবর গাণুশকে আদর করে রসগোল্লা ডাকি। আজব দেশের খোঁজ করি যেখানে ‘কচুরি আর রসগোল্লা ছেলে ধরে খায়’! আমাদের রুপোলী নায়িকা মোহ বৃদ্ধি হেতু অনায়াসে ‘কলকাত্তার রসগোল্লা’ হন। পুরনো আমাশা সারাতে লোকাল ময়রার গরম রসগোল্লার প্রাইম টাইমের খোঁজ পড়ে। বে বাড়িতে রসগোল্লার কম্পিটিশন লাগে। বে বাড়ির কথায় মনে পড়ল, মেয়ের বাড়িকে বেকায়দায় ফেলতে হুতাশী পেটুক নিয়ে রসগোল্লা গেলানোর রমণীয় ঐতিহ্যও কিন্তু আমাদের। অবশ্য অন্যরাও খুব একটা কম যান না। রসগোল্লা খাওয়া নিয়ে লখনউয়ের কাছের এক গ্রামে বে পন্ড হবার খবর তো এই বছর খানেক আগের! তবে এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা। রসগোল্লা আমাদের, রসগোল্লার অণু -পরমাণু- ইলেকট্রন- প্রোটন- মেসন- ফ্যাশন - সবেতে আমাদের অধিকার! আর কাউকে ভাগ দেব কি দেব না সে সব আপাতত ভাববো না, হুজুগের ঢেউ উঠেছে যখন ‘জয় মা’ বলে তরী আমরা ভাসাবোই।
হারাধন ময়রা না নবীন চন্দ্র দাস কে ‘রসগোল্লার কলম্বাস’, পাল চৌধুরী না বাগাল- কোন মহাজন রসগোল্লার আদত পৃষ্ঠপোষক সে নিয়ে পদ্য লিখব, গদ্য লিখব, হাঁড়ি ভর্তি করে ছবি তুলব, হাঁড়ি মাটি না পলিমার কীসের হওয়া উচিত সে সব নিয়ে তক্ক জুড়ব- কত স্কোপ! কেউ ছাড়ে! উৎসবের মেজাজ বাড়াতে রস উৎসব করব, মনস্টার গোল্লা বানাব, সেলফি তুলে ক্যাপশন দেব- ‘আমি ও আমার রস’! কত সুযোগ বলুন তো বস!
তারপর এই আমরা, টপ টু বোটম অসাম্প্রদায়িক শিক্ষিত সংস্কৃত সমাজ বিজেতার হাসি ঝুলিয়ে বিজিত প্রতিবেশীদের আদর করে উড়ে বলব, গাল পাড়ব, ভাষা- উচ্চারণ মায় সৎকার নিয়ে খিল্লি করব। এই না হলে চলে!
দাস আর দাসত্ব, প্রভু আর প্রভুত্বের এই সুপ্রাচীন গড্ডলিকা প্রবাহের সমাজে হুজুগের ঢেউয়ে দুলতে দুলতে যা যা না করলেও চলে তার সব আমরা করব, রসগোল্লার রস নিংড়ে ছিবড়ে না হওয়া পর্যন্ত করব, রসে মুখ মেরে এলেও নোনতা খেয়ে ফের রস খাব, একাই খাব- কিঁউ কি ভার্চুয়াল আমি-র বড় একলা বাঁচার অভ্যেস। কিন্তু হে রসগ্রাহী বঙ্গভূমের ব্যঙ্গপ্রেমী সোশ্যাল মিডিয়ার পথিককুল, ফুটপাথের ফুলো পেটের শিশুটার হাতে একটিও কি রসগোল্লা উঠবে না!
তা বলে যেন তেঁতুল পাতা ন’জন সমাজ ভেবে বসবেন না! ও সব বেশ পুরনো দিনের কথাবাত্তা! এখন ভার্চুয়াল সমাজের দিন! কাজেই ভার্চুয়ালি সামাজিক সবাই। ভার্চুয়াল বিপ্লব, ভার্চুয়াল নৈবেদ্য, ভার্চুয়াল পরকীয়া, ভার্চুয়াল বিল্বপত্রপুষ্পাঞ্জলি। নিত্যি দিন আপডেটেড থাকতে চান তো বস ভার্চুয়াল বিশ্বে আসুন। লোকাল টু গ্লোবাল যে কোনও বিষয় নিয়ে পোস্টাপুস্টি করুন। পাড়ায় ছেনোদার বাওয়াল থেকে সেলিব্রিটির লুকোনো ছাওয়াল, মাওয়ালি থেকে কাওয়ালি, পোস্ট মডার্ন আর্ট টু নেপোলিয়ন বোনাপার্ট- মতামত দিন, আলোচনার খই ফোটান। অন্যের উন্নতির ফোটোয় ‘শুভেচ্ছা’ লিখে মনের সুখে ‘শ’ কারান্ত অবতারের শাবক বলে গাল পাড়ুন! সুখই সুখ!
মোবাইলে সশব্দ ঢ্যারা দিয়ে রাখুন বিশেষ দিনগুলোয়। ঠিক ঠাক পোস্ট দিলে যেকোনো দিবসের আপনিই ‘দি বস’! দৈনন্দিন খবর টবর রাখুন। কোনও বল মাটিতে পড়তে দেওয়া যাবে না! এভারেস্টে চড়তে গিয়ে কে নিখোঁজ হল, সবার আগে পোস্টান। পারলে পদ্য লিখুন। যে কোনও রিসেন্ট জিনিস পাবলিক ফাটাফাটি খায়। এই দেখুন না এখন কেমন রসগোল্লা খাচ্ছে পাবলিক! যে কোনও মিডিয়ায় যান, রসগোল্লার রসে রসে একেবারে রসাকার! বছর দুয়েক আগেও একবার এমনি হয়েছিল, তখনও পাবলিক মেতেছিল, তবে এখনকার মাতন অবশ্য আরও গাঢ়! হবে না বলুন, একটা আভিজাত্যের লড়াইয়ে এত বড় জিত বলে কথা!
এই ‘টোটাল’ বিশ্বে সংস্কৃতি নামক আভিজাত্যের পেটেন্ট তো আমাদেরই। এ ব্যাপারে গুরু ‘মন মে হ্যায় বিশোয়াস/ পুরা হ্যায় বিশোয়াস! আমরা সর্বদা উত্তম পুরুষ। আমরা আর্টিস্টিক ঘরানার মানুষ। যৌবনে সবাই পদ্য লিখি। টিকিতে গাঁদা ফুল বেঁধে নাস্তিক্যের ভাষণ ঝাড়ি। এক কথায় কায়িক নয়, ‘লাইক’ মেলার শ্রমে আমাদের বড়ই টান; আর যদি মাইক জুটে যায় তাইলে তো ধরে রাখাই দায়! গুপ্ত চুলকুনির মত সুপ্ত প্রতিভা ভসভসিয়ে উথলে ওঠে। তবে আর একটা কথা না বললেই নয়, আমরা ভোজন রসিক। লাইফের ‘টোটাল’ বাসনার ফিফটি ফাইভ পয়েন্ট ফাইভ সেভেন পার্সেন্ট রসনায় কেন্দ্রীভূত।
এ হেন রসনামোদী আমাদের রসালো ঐতিহ্যের বিশ্ব জয়! কম কথা! বাংলায় ‘টক’ করতে ‘টাং’ হয়তো ‘লক’ হয়, তা বলে কি প্রেম দেবে না! ছানা পোনা কেউ বাংলায় কথা বললে স্ট্যাটাসে ঘ্যাটাস লাগে বটে, তা বলে কি পোস্ট দেব না! ছাওয়াল বাংলা মাধ্যমে পড়লে হয়তো মনে ‘নিম্নচাপে’র বেহুলো বাজে, তা বলে কি ‘হুক্কা’ ডাকলে ‘হুয়া’ দেব না! লড়াই আমাদের জন্মগত অধিকার, বাংলা মায়ের জন্যে আমরা সারাদিন অনলাইন থাকতে পারি। আমাদের টপকে অধিকার নিয়ে যাবে, আর আমরা বসে বসে দেখব ‘আমরা কি মার সেই ছেলে?’
আমাদের সার্চ আছে, রিসার্চ আছে, বুদ্ধি আছে, বাঁশ আছে- আমরা খুঁজে পেতে ঠিক তথ্য জোগাড় করে নেব। নেব কী, নিয়েইছি তো! জি.আই. ট্যাগখানা তো এখন আমাদের! জি.আই. ট্যাগটি খাদ্য না চুল গজানোর কটুগন্ধী তেল- ও সব ভাবার দরকার নেই, ও বস্তুটি পেয়ে রসগোল্লার ন্যাজ কতটা ওঁচালো সে ভাবারও দরকার নেই- দরকার কেবল মাতন। দুগ্গাপুজো চলে গেছে, এমন কী রাশ মেলাও গত- এমন খটখটে খরার সময় এমন হাতে গরম রস উৎসবের হুজুগ পেলেও মাতবো না!
আর তাছাড়া রসগোল্লার সাথে কি আমাদের এক দিনের সম্পক্ক! একই বস্তু, তার কত রস! কত মাত্রা! পরীক্ষার আগে তার নামে অযাত্রা, পরীক্ষায় তাকে পেলে বাড়িতে কু সন্তান, আবার যেই না বাড়ির গুচ্চুমনা ফাস্টোকেলাস পেলে, অমনি নচোগোল্লার হাঁড়ি নিয়ে নছো বিতরণ! একই অঙ্গে কত রূপ! বঙ্গ জীবনের অঙ্গ। সে জন্যেই না নাদুস নুদুস গোবর গাণুশকে আদর করে রসগোল্লা ডাকি। আজব দেশের খোঁজ করি যেখানে ‘কচুরি আর রসগোল্লা ছেলে ধরে খায়’! আমাদের রুপোলী নায়িকা মোহ বৃদ্ধি হেতু অনায়াসে ‘কলকাত্তার রসগোল্লা’ হন। পুরনো আমাশা সারাতে লোকাল ময়রার গরম রসগোল্লার প্রাইম টাইমের খোঁজ পড়ে। বে বাড়িতে রসগোল্লার কম্পিটিশন লাগে। বে বাড়ির কথায় মনে পড়ল, মেয়ের বাড়িকে বেকায়দায় ফেলতে হুতাশী পেটুক নিয়ে রসগোল্লা গেলানোর রমণীয় ঐতিহ্যও কিন্তু আমাদের। অবশ্য অন্যরাও খুব একটা কম যান না। রসগোল্লা খাওয়া নিয়ে লখনউয়ের কাছের এক গ্রামে বে পন্ড হবার খবর তো এই বছর খানেক আগের! তবে এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা। রসগোল্লা আমাদের, রসগোল্লার অণু -পরমাণু- ইলেকট্রন- প্রোটন- মেসন- ফ্যাশন - সবেতে আমাদের অধিকার! আর কাউকে ভাগ দেব কি দেব না সে সব আপাতত ভাববো না, হুজুগের ঢেউ উঠেছে যখন ‘জয় মা’ বলে তরী আমরা ভাসাবোই।
হারাধন ময়রা না নবীন চন্দ্র দাস কে ‘রসগোল্লার কলম্বাস’, পাল চৌধুরী না বাগাল- কোন মহাজন রসগোল্লার আদত পৃষ্ঠপোষক সে নিয়ে পদ্য লিখব, গদ্য লিখব, হাঁড়ি ভর্তি করে ছবি তুলব, হাঁড়ি মাটি না পলিমার কীসের হওয়া উচিত সে সব নিয়ে তক্ক জুড়ব- কত স্কোপ! কেউ ছাড়ে! উৎসবের মেজাজ বাড়াতে রস উৎসব করব, মনস্টার গোল্লা বানাব, সেলফি তুলে ক্যাপশন দেব- ‘আমি ও আমার রস’! কত সুযোগ বলুন তো বস!
তারপর এই আমরা, টপ টু বোটম অসাম্প্রদায়িক শিক্ষিত সংস্কৃত সমাজ বিজেতার হাসি ঝুলিয়ে বিজিত প্রতিবেশীদের আদর করে উড়ে বলব, গাল পাড়ব, ভাষা- উচ্চারণ মায় সৎকার নিয়ে খিল্লি করব। এই না হলে চলে!
দাস আর দাসত্ব, প্রভু আর প্রভুত্বের এই সুপ্রাচীন গড্ডলিকা প্রবাহের সমাজে হুজুগের ঢেউয়ে দুলতে দুলতে যা যা না করলেও চলে তার সব আমরা করব, রসগোল্লার রস নিংড়ে ছিবড়ে না হওয়া পর্যন্ত করব, রসে মুখ মেরে এলেও নোনতা খেয়ে ফের রস খাব, একাই খাব- কিঁউ কি ভার্চুয়াল আমি-র বড় একলা বাঁচার অভ্যেস। কিন্তু হে রসগ্রাহী বঙ্গভূমের ব্যঙ্গপ্রেমী সোশ্যাল মিডিয়ার পথিককুল, ফুটপাথের ফুলো পেটের শিশুটার হাতে একটিও কি রসগোল্লা উঠবে না!
যদি বা ওঠে, ছবি তুলে পোস্টাব কি ভার্চুয়াল ‘কাঁচকলা’র আশায়?
প্রকাশিত:
19.11.2017
Magazine.kolkata24x7.com
প্রকাশিত:
19.11.2017
Magazine.kolkata24x7.com
ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
Comments
Post a Comment