Skip to main content

ঝমঝম- নিটোল অথচ নির্ভার একটি কাহিনি



                              ঝমঝম- নিটোল অথচ নির্ভার একটি কাহিনি

                                 সুদিন চট্টোপাধ্যায়








ছোটোদের জগৎ এখন আর ছড়া-ছবি, গল্প-গাঁথার একচ্ছত্র দখলে নেই। কেউ কেউ বলেন আধুনিকতার আগ্রাসনে শৈশব এখন লুপ্তপ্রায় । সেই ফাঁকা জায়গাটা ভরিয়ে তুলে হারানো দিনগুলোর মাধুর্য ও মায়াময়তা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যে স্নেহভাজন শাশ্বত কর কলম খুলে লিখে ফেলেছে 'ঝমঝম'।

শাশ্বত'র কবিতা পড়েছি অনেক, স্বাদু গদ্যেও সে সমান সাবলীল , কিন্তু তার শিশু ও কিশোরভোগ্য ছমছমে, ঝমঝমে লেখা পড়লাম এই প্রথম এবং বলাই বাহুল্য আমাকেও ও শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে গেলো ওর গল্পবলার যাদুতে। 

নিটোল অথচ নির্ভার একটি কাহিনি, কতো বিচিত্র চরিত্রের যে আনাগোনা, সিন্দুক ভর্তি রহস্য আর তার খোঁজে পালং, পিড়িং, তিড়িং সকলে নাস্তানাবুদ । বিষাদ, সরলতা, কপট গাম্ভীর্য, হৈচৈ, হাসির উচ্ছ্বাস এমনই যে তা শেষ পর্যন্ত ঝমঝম সেলুনের গগন কাকাকেও হাসিতে ভাসিয়ে দেয়।

শাশ্বতকে নবীন লেখক বলবো না। যথেষ্ট পরিণত বিন্যাসেই সে ছোটোদের বন্দি করে ফেলেছে তার মজাদার কাহিনির অক্ষরমালায়। সাহিত্য-সংগীতের দুনিয়ায় ক্ষুদেরা আজ উপেক্ষিত, উপোসিও বটে। তাদের কথা ভেবে শাশ্বতের মতো আরও কয়েকজন গুণী লেখক এগিয়ে আসুন না, ভরিয়ে তুলুন ওদের নির্মল আনন্দময় গল্প শোনার ক্ষিধে। শাশ্বতকে অভিনন্দন আমাকে ওর ২০০ পাতার বইখানি আদ্যন্ত কানধরে পড়িয়ে নেওয়ার কৌশলের জন্যে।


\





       কিশোর উপন্যাসঃ ঝমঝম
       লেখক ঃ শাশ্বত কর
       প্রকাশক ঃ পত্রভারতী
       মূল্যঃ ১৫০ টাকা

       প্রাপ্তিস্থানঃ পত্রভারতী আউটলেট ৩/১, কলেজ রো, কোলকাতাঃ ৭০০ ০০৯, 
                       টি.এন.বুক স্টল, (দমদম ১ নং প্ল্যাটফর্ম, সাবওয়ের পাশে)
                       ধ্যানবিন্দু, কলেজ স্কোয়ার







Review of Jhom Jhom by Saswata Kar by Proffessor Sudin Chattopadhyay, former president of West Bengalo Board of secondary education

Comments

Popular posts from this blog

বর্ষ শেষ, থার্মোডিনামিক্সের প্রথম সূত্র আর সাধারণ জীবন

  শাশ্বত কর       বর্ষশেষের সূর্য অস্ত যাচ্ছে। শীত তো পড়েছে। লাল সোয়েটার, মোজা, মাঙ্কিক্যাপে জুবুথুবু বৃদ্ধ সূর্য অস্ত যাচ্ছেন। যাচ্ছেন কি? যাচ্ছেন কোথায়? লাখ টাকার প্রশ্ন! বিজ্ঞানের এক উত্তর, শিশু ভোলানাথের এক উত্তর, গোঁয়ার গোবিন্দর এক উত্তর, বোদ্ধার এক উত্তর! ঘন রহস্য! অথবা কোনোই রহস্য নেই। কৃষ্ণ কেমন, না যার মন যেমন। জলে হাওয়ায় গেলাস ভরা ভাবলে ভরা, আধখানা খালি ভাবলে খালি। আসল কথাটা হলো আজ বছরের শেষ সন্ধ্যে। আজ হেব্বি সেলিব্রেশন! কোথাও জামাল কুদু, কোথাও লুটপুট গয়া তো   কোথাও দিন হ্যায় সানি সানি সানি-   চারপাশ থেকে নানা রকমের গান ভেসে আসছে। একের সুরে আরেক চেপে বসায় কোনোটাই দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না মনে। এমনটাও ভালো। এতেও এক ধরণের নির্লিপ্তি আসে। নির্লিপ্তিই তো মুখ্য, নির্লিপ্তিই মোক্ষ। আজ ভর দুপুরে ছাদে গিয়ে অবহেলায় বেড়ে ওঠা গাছপালাগুলোর একটু পরিচর্যা করলাম। খালি দুটো টবে দুটো বীজ পুঁতলাম। একটা উচ্ছের  আর একটা ঢেঁড়সের । এই দুটোই আসলে আজকের বর্ষ শেষের আমি। কাজের দুনিয়ায় যেমন তেঁতো, ঘরের দুনিয়ায় তেমনি ঢেঁড়স। তো দুই আমিকে বছর শেষে দিলাম পুঁতে। নতুন ভোরে খোলস ছেড়ে বেরি

অসুস্থ সমাজ, অরাজনৈতিক আন্দোলন এবং নিছক সাধারণী আবেদন

  ডাক্তারদের অনশন আজ ১০ দিনে পড়ল । পাঁচই অক্টোবর থেকে আমরণ অনশনে বসেছেন। প্রথমে ছ'জন পরে আরো একজন , উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে আরও দু'জন জুনিয়র ডাক্তার আমরণ অনশনে বসেছেন। বলছি বটে জুনিয়র, কিন্তু যে পর্যায়ের পরিণত মনোভাব এঁরা দেখিয়েছেন এবং দেখাচ্ছেন চিকিৎসা পরিভাষায় যাই হোক, মানবতার পরিভাষায় এরা সিনিয়রস্য সিনিয়র।  অনশন। কেবল জল। আর কিছু নয় । বলাই সহজ, কাজে মোটেই সহজ নয়। একবার রাগ করে না খেয়ে একবেলা ছিলাম। আর মনে পড়ে আর একবার মায়ের সাথে উপোস করেছিলাম কোজাগরি পূর্ণিমায়। দুবারই সন্ধ্যে হতে না হতেই হাটুতে হাঁটুতে ঠোকাঠুকি লেগেছিল। আর টানা 10 দিন অভুক্ত ঘরের ছেলেমেয়েরা! এখনো চলছে তাঁদের অনশন ব্রত।  শারীরিক সমস্যা জয় করতে হচ্ছে। জনমানসের আশা প্রত্যাশার পাহাড় জয় করতে হচ্ছে। মানসিক চাপ জয় করতে হচ্ছে। রাষ্ট্রের চাপ। সহজ কথা তো নয়। তাও জয় করতে হচ্ছে। অকথা কুকথাকে খড়কুটোর মত ছুঁড়ে ফেলে পাখির চোখে চোখ রাখতে হচ্ছে। কেন করছেন তারা অনশন? রাজ্যে গত নয়-ই অগস্ট নারকীয় ঘটনা ঘটে গেছে আর জি কর মেডিকেল কলেজে। তাদেরই সহকর্মী দিদি অথবা বোনের নৃশংস পরিণতি তাঁদের মুঠো শক্ত করেছে। চ

এসো মা, এসো মা উমা

 শাশ্বত কর সুপ্তপর্ব “যেয়ো না, রজনি, আজি লয়ে তারাদলে! গেলে তুমি, দয়াময়ি, এ পরাণ যাবে!” ঠাকুর দালানে ধুনুচি সাজানো হচ্ছে। এও এক শিল্প! নারকেলের ছোবড়া উল্টো করে এমন করে সাজা হবে যে ধুনুচি নিম্নমুখী হলেও সহজে পড়বে না! নইলে আরতি জমবে কেমন করে!  ছোবড়া চুঁইয়ে ধোঁয়া মিশছে বাতাসে। বাতাসে ধুনোর গন্ধ! বাতাসে কর্পুরের গন্ধ! বাতাসে শিউলি, ছাতিম, বাতাবি ফুলের গন্ধ! বাতাসে ঠান্ডা আদর! আদর আমার গালে। মায়া আদর, আচ্ছন্ন আদর। যে সুগন্ধী বাতাস নাকি গোলাপের মৃদু পাঁপড়ি এই আদর এঁকে গেল, এই তো খানিক আগে যখন তেতলার চক বারান্দা থেকে ঝুঁকে নিচে ঠাকুরদালানের পাশে রাঙাপিসিমাদের আড্ডা দেখছিলাম, তার নাম এখানে লেখার কীই বা দরকার? গতকাল সকালে পুষ্পাঞ্জলির ফুল বেলপাতা সেই আমায় দিয়েছে, ভিড়ের অছিলায় আঙুল ছুঁয়ে গেছে। কাছে আসলেই মায়ের পুজোর গন্ধ ছাপিয়ে যে গন্ধটা আমায় কাঁপিয়ে দিয়ে যাচ্ছে, সেটা ঠিক পুব বাগানের বাঁধানো বেদির পাশে রাত আলো করে থাকা নিশিপদ্মের মতো! এ গন্ধের কাছে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকা যায় ঘন্টার পর ঘন্টা! এখন যেমন হাবার মতো দাঁড়িয়ে আছি চক বারান্দায়। হাতে শ্রীশঙ্খ! ঠাকুর তোরঙ্গ থেকে বড় শাঁখখানা আনতে পাঠিয়েছিলেন র