Skip to main content

Popular posts from this blog

অসুস্থ সমাজ, অরাজনৈতিক আন্দোলন এবং নিছক সাধারণী আবেদন

  ডাক্তারদের অনশন আজ ১০ দিনে পড়ল । পাঁচই অক্টোবর থেকে আমরণ অনশনে বসেছেন। প্রথমে ছ'জন পরে আরো একজন , উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে আরও দু'জন জুনিয়র ডাক্তার আমরণ অনশনে বসেছেন। বলছি বটে জুনিয়র, কিন্তু যে পর্যায়ের পরিণত মনোভাব এঁরা দেখিয়েছেন এবং দেখাচ্ছেন চিকিৎসা পরিভাষায় যাই হোক, মানবতার পরিভাষায় এরা সিনিয়রস্য সিনিয়র।  অনশন। কেবল জল। আর কিছু নয় । বলাই সহজ, কাজে মোটেই সহজ নয়। একবার রাগ করে না খেয়ে একবেলা ছিলাম। আর মনে পড়ে আর একবার মায়ের সাথে উপোস করেছিলাম কোজাগরি পূর্ণিমায়। দুবারই সন্ধ্যে হতে না হতেই হাটুতে হাঁটুতে ঠোকাঠুকি লেগেছিল। আর টানা 10 দিন অভুক্ত ঘরের ছেলেমেয়েরা! এখনো চলছে তাঁদের অনশন ব্রত।  শারীরিক সমস্যা জয় করতে হচ্ছে। জনমানসের আশা প্রত্যাশার পাহাড় জয় করতে হচ্ছে। মানসিক চাপ জয় করতে হচ্ছে। রাষ্ট্রের চাপ। সহজ কথা তো নয়। তাও জয় করতে হচ্ছে। অকথা কুকথাকে খড়কুটোর মত ছুঁড়ে ফেলে পাখির চোখে চোখ রাখতে হচ্ছে। কেন করছেন তারা অনশন? রাজ্যে গত নয়-ই অগস্ট নারকীয় ঘটনা ঘটে গেছে আর জি কর মেডিকেল কলেজে। তাদেরই সহকর্মী দিদি অথবা বোনের নৃশংস পরিণতি তাঁদের মুঠো শক্ত কর...

এসো মা, এসো মা উমা

 শাশ্বত কর সুপ্তপর্ব “যেয়ো না, রজনি, আজি লয়ে তারাদলে! গেলে তুমি, দয়াময়ি, এ পরাণ যাবে!” ঠাকুর দালানে ধুনুচি সাজানো হচ্ছে। এও এক শিল্প! নারকেলের ছোবড়া উল্টো করে এমন করে সাজা হবে যে ধুনুচি নিম্নমুখী হলেও সহজে পড়বে না! নইলে আরতি জমবে কেমন করে!  ছোবড়া চুঁইয়ে ধোঁয়া মিশছে বাতাসে। বাতাসে ধুনোর গন্ধ! বাতাসে কর্পুরের গন্ধ! বাতাসে শিউলি, ছাতিম, বাতাবি ফুলের গন্ধ! বাতাসে ঠান্ডা আদর! আদর আমার গালে। মায়া আদর, আচ্ছন্ন আদর। যে সুগন্ধী বাতাস নাকি গোলাপের মৃদু পাঁপড়ি এই আদর এঁকে গেল, এই তো খানিক আগে যখন তেতলার চক বারান্দা থেকে ঝুঁকে নিচে ঠাকুরদালানের পাশে রাঙাপিসিমাদের আড্ডা দেখছিলাম, তার নাম এখানে লেখার কীই বা দরকার? গতকাল সকালে পুষ্পাঞ্জলির ফুল বেলপাতা সেই আমায় দিয়েছে, ভিড়ের অছিলায় আঙুল ছুঁয়ে গেছে। কাছে আসলেই মায়ের পুজোর গন্ধ ছাপিয়ে যে গন্ধটা আমায় কাঁপিয়ে দিয়ে যাচ্ছে, সেটা ঠিক পুব বাগানের বাঁধানো বেদির পাশে রাত আলো করে থাকা নিশিপদ্মের মতো! এ গন্ধের কাছে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকা যায় ঘন্টার পর ঘন্টা! এখন যেমন হাবার মতো দাঁড়িয়ে আছি চক বারান্দায়। হাতে শ্রীশঙ্খ! ঠাকুর তোরঙ্গ থেকে বড় শাঁখখানা আনতে পাঠি...

আজ আমাদের নেড়াপোড়া

আজ আমাদের নেড়াপোড়া শাশ্বত কর    ইশকুল ছুটি হল কি না হল দুদ্দাড় করে দৌড়। দলের সব্বাই! দৌড়তেই হবে। নইলে অন্য দল যে নিয়ে নেবে। শেষমেশ হারতে হবে নাকি! নৈব নৈব চ! কাজেই ছুট। ছুটতে ছুটতেই হাতের কাছে যা পাওয়া যায়, মানে সুপুরির পাতা, তালের ডগা, নারকেলের ডাগা- কুড়িয়ে নিয়ে ছুট! ভাঙা ভাঙা পিচের রাস্তা। শুকনো পাতার ঘষায় তার গয়না আলগা। কুচি পাথর পাতার টানে নড়নড়িয়ে এগিয়ে চলে। ধুলো ওড়ে। উড়ুক গে। আগে তো পাড়ায় পৌঁছোই, তারপর ভৌমিকদের ভিতের গর্তে এগুলো ডাঁই করতে হবে। ওটাই এবারের গুদাম। গুদামে মাল জমা চলছে গত সপ্তাদুয়েক। মন ভরছে না। আজ শেষদিন। বাড়ি গিয়েই তাই বস্তা নিয়ে বেরোনো হবে কুচো পাতা একাট্ঠা করতে। তাই হল। দলে পাঁচজন। দুটো বস্তা। একটা ভরতে হবে বাঁশপাতায়। কাজেই যেতে হবে ক্যাটাইবুড়োর বেগুন খেত পেরিয়ে মিত্রবাড়ি। বাড়ি বলে বাড়ি! যেমন বড় কবি, তেমনি বড় তাঁর মামার বাড়ি! যেমন ছন্দের যাদুকর, তেমনি ছন্দ ভরা বাগান! বাগানের ভিতর দিয়ে আমাদের ইশকুল যাবার শর্টকাট। গাছ আর  গাছ! শাল সেগুন শিমুল অশোক। একপাশে বাঁশের ঝাড়। সারাক্ষণ সরসর সরসর হাওয়া।  সেখানে পৌঁছেই বাঁশপাতা কুড়োতে শুরু করে দিল বুড়ন আর ...